ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান:
মুজিব শতবর্ষে সর্বাগ্রে আমি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি- যার জন্য বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বিশ্বের মানচিত্রে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে; ইতিহাসের সেই মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি। একইসঙ্গে আমি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টে কিছুসংখ্যক বিপথগামী সেনা কর্মকর্তার হাতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল, মেজ পুত্র শেখ জামাল ও কনিষ্ঠ পুত্র শিশু শেখ রাসেলসহ শাহাদতবরণকারী সবার প্রতি।
লেখার শুরুতেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের কিছু কিছু অংশ উল্লেখ না করে পারছি না। জাতিসংঘের ইউনেস্কোর প্রামাণ্য দলিল হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ স্থান পাওয়া ছিল যেন সময় কর্তৃক পূর্বনির্ধারিত এবং ইতিহাসের একটি উজ্জ্বল অবশ্যম্ভাবী পরিণতি। প্রকৃতপক্ষে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের মধ্যেই নিহিত রয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা।
অন্য কথায়, ৭ মার্চের ভাষণ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা বলে আমি মনে করি। বঙ্গবন্ধুর সেই অমর ভাষণ আজকের বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটেও আলোর পথ দেখাচ্ছে এবং সমগ্র বিশ্বে মানবজাতিকে দিচ্ছে সঠিক দিকনির্দেশনা ও করণীয় নির্ধারণ করে সঠিক পথে চলার অবিরাম প্রেরণা। সেই ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করো।’
আজকের করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে সৃষ্ট সংকট ও দুর্দিনে আমাদের যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে করোনা নামক শত্রুকে যেমন মোকাবেলা করতে পারি; তেমনি এ সংকট উত্তরণে আমরা সবাই ঝাঁপিয়ে পড়তে পারি।
বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, বাণী এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শন আজও আমাদের মুক্তির পথ দেখায়। বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শনে রয়েছে কঠিন সময়কে অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার অমৃততুল্য সঞ্জীবনী শক্তি। বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক জীবনে প্রায় ৫ হাজার দিন কারাভোগ করেছেন। ১৪ বছর জেলের মধ্যেই কাটিয়েছেন; কিন্তু কখনও মাথা নত করেননি, মনোবল হারাননি, ভীতসন্ত্রস্ত হননি, লক্ষ্যচ্যুত হননি। তাহলে আজ কেন আমরা করোনাভাইরাসের কাছে মাথা নত করব? কেন আমরা মনোবল হারাব? কেন আমরা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাব না?
করোনাভাইরাসকে পরাজিত করতে যে সাহস, মনোবল ও অবিরাম প্রচেষ্টার প্রয়োজন; সেই শিক্ষা তো আমরা বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন থেকেই নিতে পারি। সামান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা করোনাভাইরাস নামক শত্রুকে মোকাবেলা করতে পারি; অথচ বঙ্গবন্ধু তার জীবনে হাজারও সমস্যা, প্রতিকূলতা, বিপদ, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে বাংলাদেশ ও বাঙালির চিরশত্রু শক্তিশালী পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ও সৈনিকদের পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সক্ষম হয়েছিলেন একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে। তাহলে আজ কেন আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে কিছু নিয়মকানুন ও বিধিনিষেধ মেনে চলার মাধ্যমে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে পারব না।
১৯৭২ সালের ৮ অক্টোবর তৎকালীন পিজি হাসপাতালের (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) কেন্দ্রীয় রক্তপরিসঞ্চালন কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চিকিৎসকদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু গরিব-দুঃখীসহ সব রোগীকে সমান দৃষ্টিতে চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। সব নাগরিকের জন্য বারবার বলেছেন- মানবতাবোধ জাগ্রত করার কথা, মনুষ্যত্বকে ধারণ করা ও সততার প্রয়োজনীয়তার কথা।
বর্তমানে মহামারীর এ সময়ে চিকিৎসকরা মানবতাবোধ নিয়ে গরিব-দুঃখীসহ সব রোগীকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করবেন-এটাই প্রত্যাশা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী চিকিৎসকরা জীবনবাজি রেখে রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করবেন সেটাই স্বাভাবিক। আমি বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে চিকিৎসকরা বঙ্গবন্ধুর মতোই অকুতোভয় বীর সৈনিকের পরিচয় দেবেন। কোনো ভয়ের কাছেই তারা পরাজিত হবেন না। ইতোমধ্যে অধ্যাপক ডা. গাজী জহুরুল হাসান, ডা. মঈনসহ অনেক চিকিৎসক রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন। এটাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রকৃত শিক্ষা ও মহিমা।
মহামারীর এ সংকট মোকাবেলায় আমাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব রয়েছে। অপ্রয়োজনে আমরা যেন ঘরের বাইরে বের না হই। ঘরের বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। উষ্ণ বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারলে ভালো হয়। মৌসুমি ফলমূল খেতে হবে। ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত শাকসবজি খেতে হবে। মাছ-মাংস-ডিম প্রয়োজন মতো খেতে হবে। আদা চা, রং চা, গ্রিন টি পান করা যেতে পারে। লেবুর শরবত নিয়মিত পান করতে হবে। রান্নায় ও খাবারে অন্য সময়ের থেকে অধিক পরিমাণে রসুন ব্যবহার করা যেতে পারে।
ওষুধের মধ্যে প্রতিদিন একটা করে ভিটামিন ‘ডি’, ভিটামিন ‘সি’, জিঙ্কযুক্ত ও মন্টিলুকাস্ট গ্রুপের ট্যাবলেট সেবন করা যেতে পারে। খাবারের পাশাপাশি ঘরে থেকে যে ধরনের ব্যায়াম করা সম্ভব, প্রতিদিন তা অবশ্যই করতে হবে।
সাবান দিয়ে প্রয়োজনমতো যতবার প্রয়োজন ততবারই হাত ধুতে হবে। প্রয়োজনমতো হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। জীবাণুনাশক দিয়ে ঘরের ফ্লোর পরিষ্কার করতে হবে। বাইরে থেকে বাসায় ফিরে সাবান দিয়ে হাত ধোয়াসহ পরিধেয় সবকিছু ধুয়ে ফেলতে হবে। অর্থাৎ আমাদের নিজেদের সুরক্ষা নিজেকেই করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে এ কাজগুলো প্রতিদিন সম্পন্ন করা একটু কঠিন হলেও অসম্ভব নয় বলে আমি মনে করি।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী প্রকৃত সৈনিকের পরিচয় দেয়ার এটাই শ্রেষ্ঠ সময়। বঙ্গবন্ধু ছিলেন মানবিক ও সংগ্রামী দর্শনের শ্রেষ্ঠ দার্শনিক। গরিব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল তার জীবনের অন্যতম দর্শন। ইতিহাসের মহানায়ক বাঙালি জাতির পিতা ছিলেন গণমানুষের শেখ মুজিব। বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন ও কর্ম আমাদের চিন্তা-চেতনাকে করে উন্নত, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করে এবং সংকট মোকাবেলায় অসীম সাহস জোগায়। যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করে বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়াতে, ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করে।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন নির্লোভ, সৎ, ত্যাগী, সাহসী, মানবতাবাদী, সংগ্রামী, সাম্যবাদী এক মহান বিশ্বনেতা। বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় গুণ ছিল সীমাহীন সাহসের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের প্রতি অসীম ভালোবাসা, মমত্ববোধ, সহমর্মিতা, মহানুভবতা এবং মানুষের প্রতি আস্থা ও অগাধ বিশ্বাস।
১৯৭৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে যথার্র্থই বলেছিলেন, ‘মানুষকে ভালোবাসতে শেখ, দেশের মানুষকে ভালোবাসো। এ ভালোবাসার মধ্যে কোনো স্বার্থ রেখো না।’
আজকে যারা নিজেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী বলে মনে করি, করোনাভাইরাসের মতো সংকট মোকাবেলায় সত্যিই তাদের অনেক কিছু করণীয় রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের মতো বাংলাদেশের মানুষও করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকটে কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত, নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ভালোবাসা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সাহায্য করা। যে যেভাবে পারি, সেভাবেই মানুষকে সাহায্য করতে হবে। মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
সত্যিই, দেশ ও দেশের মানুষ আজ এক মহাসংকটে পতিত। এ অবস্থায় শুধু সরকারের ওপর নির্ভর না করে সবাইকেই সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। এখন নিজের স্বার্থের কথা ভাবার সময় নয়, হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার সময় নয়। মানুষকে বাঁচাতে বাস্তবতার নিরিখে বিজ্ঞানসম্মতভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। রক্ষা করতে হবে নিজেকে, রক্ষা করতে হবে নিজের পরিবারকে, প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনকে।
বাঁচাতে হবে অসহায় গরিব-দুঃখী মানুষকে। বাঁচাতে হবে করোনা আক্রান্ত রোগীদের। সত্যিকারের সাহসী বীর যোদ্ধাদের মতোই চিকিৎসাসেবা প্রদান করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জীবনরক্ষা করতে হবে। আর এসবের মধ্য দিয়েই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী প্রকৃত সৈনিকের পরিচয় দেয়া সম্ভব। এ জন্যই আমি বলেছি- বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী প্রকৃত সৈনিকের পরিচয় দেয়ার এটাই শ্রেষ্ঠ সময়।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যথার্থই বলেছেন, ভাইরাস মোকাবেলা একটি যুদ্ধ। সত্যিই, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া একটি যুদ্ধ। কোনো একটি জাতি স্বাধীনতা-আকাঙ্ক্ষায় যুদ্ধ করে; কিন্তু তারা জানেন না, কবে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। করোনাভাইরাসের মতো অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধেও আমরা যুদ্ধ করে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা জানি না, কবে এ সংকট থেকে মুক্তি পাব।
বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জীবন-জীবিকার অভূতপূর্ব সমন্বয় করে সুদক্ষ নেতৃত্বদানের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মানুষের স্বাভাবিক জীবনের গতি প্রবাহ সচল রাখার। আমাদের অবশ্যই শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষা করতে হবে।
জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর মতোই মহামারীর এ সময়ে সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। একইসঙ্গে জনগণকে বাঁচাতে করণীয় সবকিছুই করে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু তার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বলেছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণই সমগ্র বাঙালি জাতিকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিল এবং যার শেষ পরিণতি বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন রক্তিম স্বাধীনতা।
আজ বঙ্গবন্ধুরই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, এ যুদ্ধেও আমরা বিজয়ী হব। করোনাভাইরাস নামক শত্রু থেকে সমগ্র মানবজাতি স্বাধীন হবে, মুক্ত হবে। মুক্তির আনন্দ বার্তা ছড়িয়ে পড়বে বাংলার আকাশ-বাতাস থেকে সমগ্র বিশ্বে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে শামিল করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর গর্বিত অংশীদার। দেশরত্ন শেখ হাসিনা মহামারীর এ সংকট কাটিয়ে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মযার্দাপূর্ণ কাতারে শামিল করতে সক্ষম হবেন বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
বঙ্গবন্ধু সারা জীবন মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। হাজারও প্রতিকূলতা, সীমাহীন অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেও মানুষকে ভালোবেসে একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রধান কারিগর। অসীম সাহস, ত্যাগ, নিঃস্বার্থপরায়ণতা, অসম্ভব সহ্যক্ষমতা, ধৈর্য, দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি ভালোবাসা বঙ্গবন্ধুর জীবনের অন্যতম দর্শন ও শিক্ষা। এ দর্শন ও শিক্ষা করোনাকালীন সংকট কাটিয়ে উঠতে বিশেষভাবে প্রয়োজন।
বঙ্গবন্ধু যে কোনো সংকট মোকাবেলায় বিচলিত না হয়ে সাহসিকতার সঙ্গে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে সঠিক নেতৃত্বদানের মাধ্যমে সেই সংকট কাটিয়ে উঠেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও বর্তমান সংকট মোকাবেলায় সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে জাতির পিতার মতোই যোগ্য নেতৃত্বদানের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
আমাদের সবারই উচিত, জাতির পিতার জীবনদর্শন থেকে শিক্ষা নিয়ে বিচলিত না হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নে সহায়তা করা। বঙ্গবন্ধুকে যেমন কোনো বাধা, ভয়-আতঙ্ক, আঘাত, প্রতিকূলতা তাকে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর যাত্রাপথ থেকে সরাতে পারেনি, তেমনিভাবে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ের পথ থেকে সরাতে পারবে না।
পরিশেষে, শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী রাজনৈতিক নেতা, চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ অন্য সবার প্রতি। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে যেভাবে বঙ্গবন্ধু একটি সচল, কার্যকর ও মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন, সেভাবেই বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসজনিত মহাসংকট থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিতে সক্ষম হবেন; জাতিকে দেখাবেন আলোর পথ।
ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান : অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগ; কোষাধ্যক্ষ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
Leave a Reply